ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রংপুরে আসামিদের নাম প্রত্যাহার করতে এসে বাদীর হাজতবাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
🕐 ৮:১০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৪

রংপুরে আসামিদের নাম প্রত্যাহার করতে এসে বাদীর হাজতবাস

এবার হত্যা মামলা থেকে কিছু আসামির নাম প্রত্যাহার করতে এসে উল্টো পাঁচ ঘন্টা হাজতবাস করতে হয়েছে মামলার এক বাদীকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর সিএমএম আদালতে।

আদালত সূত্র জানায়, গেল ৪ আগস্ট রংপুরে মাহমুদুল হাসান মুন্না (২৩) নিহত হওয়ার ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট রংপুর সিএমএম আদালতে ১২৮ জন আসামির নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত মুন্নার বাবা কাউনিয়া উপজেলার বরুয়া হাট এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে রংপুর কোতোয়ালি থানাকে এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। এরপরে মামলার বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রকাশ হয়েছে। ৪ আগস্ট নিহত হওয়া মাহমুদুল হাসান মুন্না একজন ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন। পরবর্তীতে আসামির তালিকায় একাধিক বিএনপির কর্মীসহ একজন সাংবাদিকের নাম থাকায় সমালোচনার ঝড় উঠে সর্বত্র। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার এ মামলার বাদী আব্দুল মজিদ প্রায় ১২ জন আসামির নাম প্রত্যাহার চেয়ে এফিডেভিটের কাগজ আদালতে দাখিল করে কাঠগড়ায় দাড়ালে বিচারক তার কাছে জানতে চান, তিনি কেন এই আসামিদের নাম প্রত্যাহার করতে চাচ্ছেন। তখন মামলার বাদী আদালতকে জানান, তিনি আসামিদের চিনেন না। পরবর্তীতে বিচারকের জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে মামলার বাদী আব্দুল মজিদ জানান, তার কাছে ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছিলেন হাজী শাহা আলম ও রাহায়ানুজ্জামান নামের দুই ব্যক্তি। আদালত এফিডেফিট গ্রহণ করে মামলার বাদীকে কাটগড়ায় আটক থাকার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন দিয়ে ৫ ঘন্টা পর মুক্ত হন মামলার বাদী আব্দুল মজিদ।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলার বাদী আব্দুল মজিদ যে দুই ব্যক্তির প্ররোচনায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন তাদের একজন হচ্ছেন হাজী শাহ আলম। তিনি লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলমের ভাই। হাজী শাহ আলম আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজন সক্রিয় নেতা। অপর ব্যক্তি রাহায়ানুজ্জামান পেশায় একজন আইনজীবী বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর আদালতের একাধিক আইনজীবী।

উল্লেখ্য, আব্দুল মজিদের করা এই হত্যা মামলায় অধিকাংশ আসামি লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ ও হাতীবান্ধা উপজেলার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও কর্মী। মামলায় কয়েকজন বিএনপি নেতা কর্মীর নাম ঢুকে পড়ায় মূলত তাদের নাম প্রত্যাহার করতে এসেছিলেন বাদী।
এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে রংপুর আদালত পাড়াসহ মহানগর জুড়ে। মামলার বাদী মুক্ত হওয়ার পর আদালত পাড়ায় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলার আসামিদের বিষয়ে এখনো তিনি ভালোভাবে কিছু জানেন না। এক প্রশ্নের জবাবে এক পর্যায়ে মামলার বাদী বলেন, নানামুখী চাপে আছি, এখন আপনাদের সাথে কথা বলতে পারবো না।

 
Electronic Paper