ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গঙ্গাচড়ায় আলোকচিত্রে শহীদ আবু সাঈদের বীরত্বগাথা

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
🕐 ৭:২২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪

গঙ্গাচড়ায় আলোকচিত্রে শহীদ আবু সাঈদের বীরত্বগাথা

একটি ছবি হাজার শব্দের গাঁথুনির চেয়েও শক্তিশালী ও মূর্তমান। ছবি এমনিতেই কথা বলে, ব্যাখ্যা করার দরকার হয় না। ছবি যত সহজে বিষয়বস্তুকে জীবন্ত করে তুলতে পারে, ভাষা তেমনভাবে পারে না। একটি ছবি অনেক কথা বলে, তেমনি অনেক ছবি একত্রিত হয়ে বহু কথা বলতে পারে। জানাতে পারে নানা ধরনের সমসাময়িক ঘটনা। তেমনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদের সাহসী আত্মত্যাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পায় ভিন্ন মাত্রা। আর সেই আত্মত্যাগের জন্য আবু সাঈদ হয়ে ওঠেন গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক। অমরত্ব পাওয়া আবু সাঈদের জীবনের সেরা সময়কে ছবির অবয়বে ধরে রেখে আরেক ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন ফটো সাংবাদিক আদর রহমানও। ওই সময় আবু সাঈদের তোলা ছবি নিয়ে আরও একটি এক প্রদর্শনী হলো রংপুরের গংগাচড়া উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

বসুন্ধরা শুভসংঘ গংগাচড়া উপজেলার শাখা আয়োজিত এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শেষ দিনে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল উপচে পড়া। এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। দুই দিনের এই আয়োজনে কয়েক হাজার শ্রেণী-পেশার মানুষ ও শিক্ষার্থী প্রদর্শনী দেখতে আসেন।

গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে প্রদর্শনী চলে বৃহষ্পতিবার রাত পর্যন্ত। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন আবু সাঈদের ছোট বোন সুমি খাতুন। শিক্ষার্থী থেকে রিকশাচালক, শিশু-কিশোর থেকে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও আগ্রহের সঙ্গে প্রদর্শনীতে আসেন।

প্রদর্শণী দেখতে আসা গংগাচড়া পাকুরিয়া শরীফ কলেজের ছাত্রী মোছা. আনিকা আক্তার বলেন, বলতে চাইলে তো অনেক কিছু বলা যায়, সংক্ষেপে একটু বলতে চাই। আমাদের দেশের হাসিনা সরকার মানুষের প্রতি যে নির্যাতন করেছে, আয়নাঘরের মাধ্যমে এরূপ চিত্র যেন আমাদের আর দেখতে না হয়। আমরা একটা সুন্দর দেশ চাই।

প্রদর্শণী দেখতে আসা রংপুর ইমেজ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র লেমন বাবু বলেন, আবু সাঈদকে গুলি করার দৃশ্য টিভিতে দেখেছি। প্রদর্শণীতে এসে নিজের চোখে দেখলাম। তবে এ ধরনের প্রদর্শণী বাংলাদেশের সব জেলা ও উপজেলায় করা দরকার।

প্রদর্শণীর উদ্বোধনে শহীদ আবু সাইদের ছোট বোন সুমি খাতুন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা ছয় ভাই ও তিন বোন। এর মধ্যে আবু সাইদ ভাই অনেক মেধাবি ছিল। আবু সাঈদ ভাই আমাকে অনেক আদর করতেন। তাকে নিয়ে আামাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। এখন সব স্বপ্ন শেষ। আমার ভাইকে পুলিশ কষ্ট দিয়ে মেরছে। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের সবার ফাঁসি চাই।

ফটো সাংবাদিক আদর রহমান বলেন, আমি ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৩শ ছবি তুলেছি। এর মধ্যে বাচাইকৃত ৫০টি ছবি নিয়ে প্রদর্শণী করছি। সেদিন অনেক ঝুঁকি নিয়ে ছবিগুলো তুলেছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা শুধু আবু সাইদের বুক চিতিয়ে থাকার সময় তার বুকে গুলি চালানোর ভাইরাল ছবিটি দেখেছি। কিন্তু আবু সাঈদকে গুলি করার আগে পুলিশ কিভাবে তাকে বেধড়ক লাঠি পেটা করেছিল, সে ছবিগুলো কেউ দেখেনি। মূলত এই প্রদর্শণী আবু সাঈদের গুলি করার আগে ও পরের ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে। যদি আবু সাইদকে নিয়ে একশ বছর পরেও গবেষণা করা হয়, তাহলে হয়তো এই ছবিগুলোই যথেষ্ট হবে।

 
Electronic Paper