ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জ্বলে উঠার অপেক্ষায় অলিম্পিক মশাল

বদরুল আলম চৌধুরী
🕐 ১০:৩৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২৪

জ্বলে উঠার অপেক্ষায় অলিম্পিক মশাল

অলিম্পিক গেমসকে বলা হয় দি গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয় এই আসর। শুক্রবার অলিম্পিক গেমসের ৩৩তম আসরে পর্দা উঠবে ফ্রান্সের প্যারিসে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ভালোবাসা ও প্রেমের শহর প্যারিসে সীন নদীর তীরে মুগ্ধতা ছড়ানোর অপেক্ষায় অলিম্পিকের এবারের আসর। শিল্প-সাহিত্য আর ঐতিহ্যে ফ্রান্স আর প্যারিসের মতো মুগ্ধতা ছড়াতে পেরেছে বিশ্বের খুব কম শহর। উদ্বোধন অনুষ্ঠান হলেও এরই মধ্যে মাঠে গড়িয়েছে ফুটবল, রাগবি, হ্যান্ডবল। ফুটবলে মরক্কোর কাছে হেরে যায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।

এবারের প্যারিস অলিম্পিকে বাংলাদেশের অভিযান শুরু হয় গতকাল আর্চারি দিয়ে। রিকার্ভ ইভেন্টে অংশ নেন সাগর ইসলাম। আধুনিক অলিম্পিক গেমসের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮৯৬ সালে। এর পরের আসর হয়েছিল ফ্রান্সের প্যারিসে। ১৯০০ সালের পর অলিম্পিক আয়োজনে ফ্রান্সকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল দুই যুগ। ১৯২৪ সালের পর তৃতীয় বারের মতো অলিম্পিকের আয়োজক হলেন ফরাসীরা। সেই সঙ্গে ১০০ বছরের অপেক্ষা ঘুচতে যাচ্ছে তাদের। তাই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যাপক চমক রেখেছে প্যারিস অলিম্পিক কমিটি।

যদিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে আয়োজকরা এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ব্রিফিং করেনি। শেষ মুহুর্তে নিরাপত্তার কারণে খানিকটা রাখঢাক করেই চলছে আয়োজন। তবে তথ্য মতে, এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিন্নতা রয়েছে ব্যাপক। প্রথমবারের মতো এবরাই কোনো স্টেডিয়ামে নয়, নদীতে হবে অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধন। ফ্রান্সের রাজধানী সেন নদীর দুই ধারে গ্যালারিও করা হয়েছে। যেখানে কয়েক হাজার সাধারণ দর্শক গেমসের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন।

চারঘন্টার উদ্বোধনী-সমাপনী অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ থাকে মার্চ পাস্ট। সেই মার্চ পাস্টেও থাকছে ভিন্নতা। প্রায় দুইশ’র কাছাকাছি নৌকায় খেলোয়াড়, কর্মকর্তারা মার্চ পাস্টে অংশ নেবেন। যা আগে কখনও হয়নি।

নদীতে আয়োজনের পাশাপাশি এই গেমসের উদ্বোধনে আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য ‘জিরো কার্বন’। গেমসে আতশবাজি ও আরো অনেক দ্রব্য পোড়ানো হয় যা পরিবেশ উপযোগী নয়। এবারের গেমসে পরিবেশকে অনেক প্রাধান্য দিয়েছেন আয়োজকরা। পরিবেশের প্রতি হুমকি হতে পারে এমন কোনো কর্মকান্ডই রাখা হয়নি।

এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন দেখতে উপস্থিত থাকবেন বিশ্বের জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদরা। এছাড়াও থাকবেন রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিবর্গও। করোনা পরবর্তী সময় বিশ্বরাজনীতি এখন নানা বিভাগে বিভক্ত। এমন সময় বিশ্বের প্রায় সকল দেশ এক ছাদের নিচে।

তাই শুধু ক্রীড়া নয়, রাজনৈতিক-কূটনৈতিক দৃষ্টিও থাকছে প্যারিসের দিকে। এ জন্য ফ্রান্স সরকারও সচেষ্ট। নানা হুমকি মোকাবেলায় নিরাপত্তা খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও বাজেট রেখেছে। তবে ঐতিহ্য মেনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবার আগে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে অলিম্পিকের জন্মভূমি গ্রিসকে। তাদের পর দেখা যাবে শরণার্থী অলিম্পিক দলকে। আর সবার শেষে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে আয়োজক দেশ ফ্রান্সকে। আর রাশিয়া ও বেলারুশের অ্যাথলেটরা এই আয়োজনে অংশ নেবেন ব্যক্তিগত পরিচয়ে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজনটি পরিকল্পনা করছেন প্রখ্যাত থিয়েটার পরিচালক টমাস জলি। পুরো অনুষ্ঠান ১২টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেখানে তিন হাজার নৃত্য ও সংগীতশিল্পী এবং বিনোদনকর্মী অংশ নেবেন। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা সিনের দুই তীরের সেতুতে ও কাছাকাছি স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় থাকবেন। উদ্বোধনীতে দুই-তৃতীয়াংশ আয়োজন দিনের আলোয় আয়োজন করা হলেও বাকি অংশ দেখা যাবে গোধূলিবেলায়।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ৬-৭ হাজার অ্যাথলেট আইফেল টাওয়ারের পূর্ব কোণের অস্টারলিটজ সেতু থেকে নৌকা ও বার্জে করে সিন নদীর ৬ কিলোমিটার পাড়ি দেবেন। প্রায় পাঁচ লাখ দর্শক বিশেষভাবে তৈরি স্ট্যান্ড থেকে এই আয়োজন দেখবেন। এরই মধ্যে প্রায় তিন হাজার ইউরো মূল্যর উদ্বোধনী টিকেটের সবই বিক্রি হয়ে গেছে। তবে সিনের তীর ও আশপাশের ভবন থেকেও বিনা মূল্যে দেখা যাবে এই অনুষ্ঠান।

 
Electronic Paper