এবার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আরেক শিক্ষিকাকে হেনস্তার অভিযোগ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৬:০৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২৪
এবার শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে আরেক শিক্ষিকাকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। হেনস্তার শিকার শিক্ষিকার নাম পারভীন আক্তার। তিনি উপজেলার তেঘরিয়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
আজ মঙ্গলবার ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা সুলতানার কাছে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়- চলতি মাসের ৮ অক্টোবর শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হক তেঘরিয়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন। তখন তিনি (শিক্ষিকা) হিজাব পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। এ সময় ওই কর্মকর্তা দাম্ভিকতার সাথে তর্জনি আঙ্গুল উপর থেকে নিচু করে অবজ্ঞার সুরে ইশারা করেন এবং বলেন- ‘এটা (নেকাব) খুলেন। এভাবে থাকা যাবে না’। কিন্তু শিক্ষিকা স্বাভাবিকভাবেই হিজাব খুলতে অসম্মতি জানান এবং বলেন, হিজাবের কারণে যদি একাডেমিক কোনো কাজে ব্যঘাত ঘটে; তবে আপনি আমাকে বলতে পারেন। ব্যক্তিগত এবং ধর্মীয় বিষয়ে আপনি আমাকে বাধ্য করতে পারেন না। এতে ওই কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে- হিজাব খোলার জন্য উপর্যুপরি চাপ প্রয়োগ করে শিক্ষিকাকে অপমানিত করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগ- ওই শিক্ষা কর্মকর্তা তার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা ও অধিকারে আঘাত করেছেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এবং শিক্ষা অফিসে অনেক হিজাব পরিহিতা শিক্ষিকা তার (শিক্ষা কর্মকর্তা) এমন অনাকাঙ্খিত আচরণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য কেউ মুখ খুলতে চায় না । তিনি আরো জানান, সর্বশেষ শিক্ষা বিস্তরণ প্রশিক্ষণেও কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী নেকাব পরিহিত অবস্থায় থাকাকালীন সময়েও ওই কর্মকর্তা হিজাব ও ইসলাম সম্পর্কে নানারকম কটূক্তি ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হক বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই শিক্ষিকাকে নাম ও কোন বিষয়ে ক্লাস নেন সেটি জানতে চেয়েছি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি ভালো বলতে পারবেন। প্রধান শিক্ষক ঘটনাস্থলে ছিলেন কিনা জানতে চাইলে মাহমুদুল হক জানান প্রধান শিক্ষক স্কুলেই ছিলেন।
এদিকে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান জানান, ঝামেলার সময় তিনি বাইরে ব্যস্ত ছিলেন। তবে স্কুলের দাফতরির মাধ্যমে জানতে পেরেছেন ওই শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে তার স্কুলের শিক্ষিকা পারভীনের বাকবিতণ্ডা হয়েছে। এর বাইরে তিনি কিছু জানেন না।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন- সেদিন শিক্ষা কর্মকর্তার মাহমুদুল হক পর্দা নিয়ে কটূক্তি ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করায় শিক্ষিকা পারভীন আক্তারের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা সুলতানার বলেন, ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে দুইটা অভিযোগ ও একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। সেগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ফরওয়ার্ড করা হবে।
কেকে/এজে