ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী অবরুদ্ধ, ক্ষমা চেয়ে মুক্তি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৩:০৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২৪

সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী অবরুদ্ধ, ক্ষমা চেয়ে মুক্তি

সিরাজগঞ্জের এলজিইডির সমালোচনা যেন কাটছেই না। দুর্ব্যবহার, অহেতুক টেবিল ঘুরানো, বিল পাশ প্রদানে ধীরগতি, ঠিকাদারকে না জানিয়েই কাজ বাতিল, এমনকি নিয়ম-কানুন অনুসরণ না করেই একাধিক ঠিকাদারের চুক্তি বাতিলসহ নানা বিষয়ে ঠিকাদারদের হয়রানির অভিযোগে নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো এলজিইডির ঠিকাদারগণ।

বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এলজিইডি কার্যালয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখেন ১৫/২০ জন ঠিকাদার।

এ সময় জেলার একাধিক গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে পরিদর্শনের গাফিলতি, ঠিকাদারের সাথে দুর্ব্যবহার, বিল পাশে অনীহাসহ নানা অভিযোগের কথা নির্বাহীর সামনে উপস্থাপন করেন। এ সময় তাদের কথা গুরুত্ব না দিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ততা দেখানোয় তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সঠিক উত্তর দিতে না পারায় একপর্যায়ে তিনি ক্ষমা চেয়ে সকলকে রেখেই অফিস থেকে বের হন।

প্রথম শ্রেণীর একাধিক ঠিকাদার জানান, কাজ নিতে টাকা, শুরু করতে টাকা, বিল নিতে টাকা, ব্যাংক সিকিউরিটি নিতে টাকা, ক্যালকুলেটর ধরে কাজের জামানত ফেরত নিতে টাকা দিতে হয় জেলা ও উপজেলা অফিসারদের। দীর্ঘদিন ধরে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগ উঠলেও বদলি আর পদায়নেই তা সীমাবদ্ধ। এর ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এর আগে, তরুণ নামের এক ঠিকাদার বলেন, আমি ৭৫ লাখ টাকার পারফরম্যান্স গ্যারান্টি পাবো। গত দুই দিন আগে আবারও গ্যারান্টির টাকা চাইতে আসলে, তিনি বলেন আমার মাথা গরম আছে, আপনি আমার রুম থেকে বের হয়ে যান। তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছে, আমি যদি রাতে স্ট্রোক করে মরে যেতাম। তাহলে আমার পরিবারের কি উপায় হতো এমন প্রশ্ন নির্বাহীকে করা হলে তিনি হেসেই উড়িয়ে দেওয়ায় অন্যান্য ঠিকাদার আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

সোহান এন্টার প্রাইজের মালিক শাহাদত হোসেন বুদ্দিন জানান, আমার কাজ অনেক দিন ধরে শেষ হয়েছে, কাজটি দেখে বিলটি দেওয়ার অনুরোধ করছি একাধিকবার। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ঘুরছি। একটি কাগজ সিনিয়র প্রকৌশলী আহরাম স্যারকে ডেকে নিয়ে বলি স্যার বিষয়টা দেখেন। উনি সিনিয়র প্রকৌশলীর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন। এরপর আমাকে ধমক দিয়ে বলছেন, আপনি আমার রুম থেকে বেরিয়ে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার জানান, উনি আমার বিল আমাকে না জানিয়েই তুলেছে। আমরা শুনেছি এই নির্বাহী প্রকৌশলী অতীতে কোথাও ৮ থেকে ১০ মাসের বেশি চাকুরি করতে পারে নাই।

কবির তালুকদার নামের এক ঠিকাদার জানান, আমি একটা কাজ পেয়েছিলাম, আমি টাকা দিতে পারি নাই, এজন্য কাজ দেয় নাই। তিনি একক ক্ষমতায় রি-টেন্ডার করেছে।

এসব বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলেন তিনি বলেন, আপনাদের কাছে সব কিছুর ব্যাখা দিতে পারবো না। কাজ করলে কিছু ভূলত্রুটি হবে। যতটুকু ভূল বোঝাবুঝি হয়েছে এজন্য ক্ষমা চেয়েছি। আপনারা গণমাধ্যম কর্মী, আপনারা বেশি প্যাঁচায়েন না বলেই রুম থেকে বের হয়ে যান নির্বাহী প্রকৌশলী।

 
Electronic Paper